মুখ ও মুখোশের কাহিনী

জীবনের প্রতিদিনই হ্যালোউইনের হই হল্লায় কাটে আজকাল
মুখ ও মুখোশের দ্বন্দ্বটা বুঝিনা সহজেই সকাল সকাল ।
হ্যালোউইনের মুখোশটা আড়াল করে যে কচি কচি মুখ
তাতে থাকে খেলার আনন্দ এবং নিতান্ত নির্মল এক সুখ।

অথচ প্রত্যহই এই বুড়ো খোকাদের মুখোশ দেখে অবাক হয়ে থাকি
না , না মুখোশটা ভয়ের নয় আদৌ , মুখেই থাকে বিষবাস্প নাকি
মসৃণ মুখোশ দিয়ে , আড়াল করে রাখে মনের অন্ধকূপের হিংসা যত
অতঃপর সংক্রমিত রোগির মতো, উগলে দেয় বাক্যবাণ শত শত।

সমাজের সিঁড়ি বেয়ে ওঠে দ্রুতগতিতে, মালা চন্দন দিয়ে লোকে করে বরণ
জানেনা রাক্ষুসে এই রক্ষকেরা প্রতিপক্ষ ভাবে মানুষকে , করে সম্ভ্রম হরণ ।
মুখোশে থাকে পূত-পবিত্র স্নেহ-মাখা বটবৃক্ষের মতোই আচ্ছাদনের আশ্বাস
মুখ ভ’রে থাকে কটু কথায় , গালাগালির গরল উদ্গীরণ, আহত সেখানে বিশ্বাস।

ক্ষমতায় থাকে যে যখন , অনায়াসেই তখন তারা হয়ে যায় তার তল্পি বাহক
পালাবদল হলেই পালায় তল্পি-তল্পা নিয়ে আবার, বিপরীত কথা তখন না-হক।
আজ বঙ্গবন্ধুর নামে অশ্রুপাত তো কাল জিয়া হয়ে যান সকল কালের হিরো
মাথায় কেবল রাজাদের তোষামোদি , বাকিটা বিশাল একটা জিরো।

দোয়াতে-আশীর্বাদে , সালামে-নমস্কারে এরা সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদের কাছেই নেই
কিন্তু সেতো কেবল মুখোশ; মুহুর্তেই হন হিন্দু-বিদ্বেষী , অসাবধানে মুখটা খোলেন যেই।
মুক্তিযোদ্ধাদের জয়গান গেয়ে যান উচ্চ কন্ঠে , মুখ যখন ঢাকা থাকে মুখোশে আপাদমস্তক
অকষ্মাৎ খসে পড়লে মুখোশ “পেয়ারা পাকিস্তানের” শোকে মূহ্যমান, সত্যটা লুকোবেন কাঁহাতক।

বেকুব মানুষেরা বোঝেনা কিছুই , মুখোশ দেখেই ভাবে এই বুঝি তাদের নূরানি মুখ
আদবে-লেহাজে আনত ভক্ত , ভগবান ভেবেই শয়তানকে দিতে চায় না কোন দুখ।
এরাও আগায় ঢালেন জল এতটাই যে বৃক্ষপ্রেমির অক্ষে প্রবেশ করেন সহসা এসব ভন্ড
বোঝে না কেউ, কেটে চলেন শেকড় একই সাথে বিশ্বাসের বৃক্ষ উপড়ে ফেলাই কান্ড।

সমাজকে করে কলুসিত এরা , বিভ্রান্তির বিন্ধ্যাচলে বন্ধ করে সকল মুক্তবুদ্ধি
মুখোশকে মুখ ভেবে, সমাজই চায় এদের কাছে হায় পরম পরিশুদ্ধি ।
টিকে থাকি আমরা একদল পরিশুদ্ধ মানবকুল, থাকে অদ্ভূত এক পরিহাস
ভন্ডদের তবু করিনা তো লন্ড ভন্ড, ক্রমশই বড় হতে থাকে এই ভ্রান্তিবিলাস।

১৯শে এপ্রিল ২০১৮. ম্যারিল্যান্ড
Copyright @ Anis Ahmed

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *