ক্রন্দসী উইলো গাছটি নুয়ে থাকে এতোটাই ,
যে মনে হয় ঠিক তুমি নিমগ্ন রয়েছো তোমার ঘন চুলের আড়ালে
হয়ত শ্রাবণের বর্ষণে ভিজে গেছে তোমার চোখের পাতা
বেদনায় কুঁকড়ে গেছে একদা মনের বিস্তৃত আঙ্গিনা যেখানে ফোটাতে ফুল
স্বপ্ন-রং’এর । কিন্তু ঐ নিমগ্ন উইলো গাছটিও জানেনা
তারই মাথার উপর প্রতিদিন , কখনও চাঁদ , কখনও সূর্য আলোর বৃষ্টি ঝরায়
সবুজ জোছনায় ভেজায় প্রত্যাশায় বেড়ে ওঠা দূর্বা-ঘাসেরা
উজ্জ্বল রাখে উষ্ণতায় সেই অবশিষ্ট প্রাঙ্গনের রাবীন্দ্রিক শিরীষ শাখাগুলো।
অথচ বসন্তের পুর্ণ বিকাশেও তোমার নুয়ে পড়া চিবুক
কিংবা বৈশাখি উত্তাপেও তোমার নিরুত্তাপ সত্বা থাকে লুকিয়ে হর-হামেশা
তাতেই সূর্যে লাগে অকালে গ্রহণ, চাঁদ কাঁদে মেঘের আড়ালে লুকিয়ে মুখ।
অমাবস্যার অবসানের জন্য প্রার্থনায় বসি যতবার নিভৃত আসনে
ততবারই তোমার বিষন্ন মুখ দেখি আমার প্রসন্নতাকে করে সহজেই প্রশ্নবিদ্ধ।
চেয়েছি বার বার আমি, চাই এখনও জেনো , ওপরে চেয়ে দেখো একবার
যেখানে দিনের অবসানেও রংধনু আকাশে মেলেছে পাখা
রাতের আঁধারকে করেছে তুচ্ছ ওই এক রত্তি জোনাকির দল।
উইলো গাছের অনুকরণে তা হলে কেন আড়াল করো নিজ সত্বাকে
কেন একই স্থানে আবদ্ধ করে রাখা নিজেকে
চলমান দ্রুতগামি ট্রেনে উঠতে অযথা এতো বিলম্ব কেন তোমার
শুধু শুধু ফেলে আসা ইষ্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকো ল্যাম্পপোস্টের দৃঢ়তা নিয়ে
আঁধার ঘোঁচাও আশ-পাশের অথচ নিজের আঙ্গিনাকে রাখো অন্ধকারে ।
দুঃখবিলাস বলে দুঃখ তোমার বাড়াতে চাইনি আমি তবু মনে হয়
মাঝে মাঝে পোষা ময়নার মতোই তোমার মনের খাঁচায় পুষে রাখো দুঃখদের
কখনও কখনও মেলে ধরো রোদে , শুকায় না তবু চোখের জল ।
একবার অন্তত ঘন চুলের আড়াল থেকে তোলো তোমার মুখখানি
প্রান্তিক অবস্থান ছেড়ে উঠে এসো , হয়ে যাও কারও হৃদ্যিক রাণী ।
৭ই আগস্ট ২০১৬, ম্যারিল্যান্ড
Copyright@ anis ahmed