প্রতীক্ষা যখন বৃষ্টির

বোশেখী বিকেলের বর্ষণ স্পর্শ করে যায় বুড়ো বটের শুষ্ক মন
এইতো সেদিনও সেখানে খাঁ খাঁ রোদে পুড়েছে শাখা প্রশাখা
অকষ্মাৎ অনর্গল বৃষ্টিতে ঝাপসা হয়ে আসা চোখে
আনন্দের অশ্রুপাতে মগডালের মনটি তার খুশিতে ডগমগ।
এখনতো তরতাজা হয়ে উঠবে বাগানে লাগানো তরকারি গাছেরা সব
বর্ষা নামার আগেই বর্ণিল পেখম মেলবে ময়ুরেরা নিশ্চয়ই ।

কিন্তু না, অব্যক্ত এই আশ্বাসে, বিশ্বাসের চারণভূমি আবারও তৃণ-শূন্য
উষ্কো-খুষ্কো চুলে বটের তলায় বসে থাকে সেই পুরোনো পাগলটা
খানিক আগেই যে অঝোর ধারে ভিজেছিলো, পাতার ফাঁকে পাওয়া
কয়েক ফোঁটা জলে; চাতক চিত্ত তার বিত্তহীন বেদনায় বিহ্বল এখন।
হতাশায় আহত কুয়াশারা ঘিরে ফেলে আপাদমস্তক বুড়ো বটগাছটিকে
হতভম্ব চোখে খোঁজে কেবল সেই এক খন্ড মেঘকে বিচলিত মনে।

অমন করে ভালোবাসার বিশুদ্ধ জলে ভেজা হয়নি আগে কখনও
যেমন সেদিন গোধূলি বেলার বিন্দু বিন্দু বৃষ্টি ভিজিয়েছিল বৃক্ষকে
রোদেলা বিকেলের বর্ষণ, পূত-পবিত্র করেছিল প্রতিটি পাতা এবং শাখা
সেই থেকে আজ অবধি প্রকৃতি খুঁজেছে বার বার সেই অকৃপণ জলধি
বিধি যেন কোন ব্যাধিতে বেঁধে দিলো ভাসমান মেঘ তোমায়
স্বল্প সিক্ত করেই চলে গেলে তুমি , মাটি-মন যেন আবার পাথরে পরিণত।

বটবৃক্ষের এ প্রতীক্ষার রজনী অমাবশ্যায় সমাধিস্থ থাকবে কি অনাদি কাল
নাকি আবার শুক্লপক্ষের চাঁদের আলোয় ভালোবাসা পাতবে ঐ জলে ভেজা জাল।

২৯শে জুলাই ২০১৬, ম্যারিল্যান্ড
Copyright@ anis ahmed

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *