সুর-অসুরের কথকতা

সে দিন, সে এক সন্ধ্যায়
সুর সাগরের তীরে দাঁড়ালাম এসে
প্রাত্যহিক এই উত্তপ্ত বালুকারাশি
অথবা নুড়ি পাথরের বিচিত্র সমাহার পেরিয়ে
ভেবেছিলাম সাগরে ডুব দেবো অনায়াসেই ।
বেলাভূমির মতো এই ভাবনার গুড়েও পড়লো বালি আমার।

জানতাম না, জন্ম-জন্মান্তর থেকেই বাধা অন্তহীন
অসুরেরা চতুর্দিকে এমনই খড়্গ হস্ত
যে সুরেরা প্রায়শই হয়ে যায় রক্তাক্ত
সেতারের তারেরা সব জড়ায় বিস্ফোরকে আজকাল
ফোড়ন কাটে বারবার সুরের বিরুদ্ধে যারা
অশুভ ইঙ্গিতেই সঙ্গীতকেই খর্ব করে খড়্গ হাতে।

অংকের মতোই যে অনুপাতে উদ্ভব সুরের
সেই গণিতকেই গিনিপিগ ক’রে অসুরের দলগুলো
আনবিক অস্ত্র বানায় মানবিক অনুভবকে পাশ কাটিয়ে
পরমাণুর প্রেমে রাঘব বোয়ালেরা কাটায় বিনিদ্র রাতগুলো
তারা সুরের অনুদের সুক্ষ অনুভুতি বোঝেনি কখনও
তাদের মনোভূমিতে থেকে যায় বনভূমির আদিম হিংস্রতা।

সুরের অনুরণন শুনি কোরানে, বেদে,বাইবেলে কিংবা ত্রিপিটকে
শুধু এই গ্রন্থগুলোর সত্বাধিকারি বলে বিতর্কাতীত দাবি যাঁদের
তারাই হয়ে ওঠেন সঙ্গীতের শক্ত এক বৈরিপক্ষ
সঙ্গীতের সঙ্গতিতে তাঁরা চান না সেই কাঙ্খিত ঐকতান
যাতে বাহ্যত বৈরিরা হতে পারেন সহপক্ষ সবার
বিভেদে বিতৃষ্ণায় যারা তৃষ্ণার্ত মানুষের জন্য তাঁরাই হয়ে যান প্রান্তিক পক্ষ।

তাই সুরের তরঙ্গ যতটা স্পর্শ করেছিল হৃদয়, সেই গোধূলি বেলায়
ততটা এগুতে পারিনি কেউ অভিন্ন ভালোবাসার ভিন্ন এক ভেলায়

২৭শে নভেম্বর ২০১৮, ম্যারিল্যান্ড
Copyright@Anis Ahmed

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *